
দেহের সন্ধিযুক্ত স্থানে প্রদাহ হলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে আর্থ্রাইটিস বলে। আর্থ্রাইটিস বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে তার মধ্যে রিউম্যাট্যেড আর্থ্রাইটিস অন্যতম এবং এটা সাধারণত যৌবনের প্রারম্ভ থেকেই শুরু হয়। এর কারণ এখনো অজ্ঞাত এবং প্রায় ক্ষেত্রেই এটা বংশগত হতে দেখা গেছে। পুরুষ অপেক্ষা মহিলারাই বেশী এই যন্ত্রণাদায়ক রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। কোন কোন সময় সংক্রামক রোগের প্রকোপ থেকে এরুপ বাত হতে পারে এবং রোগের নিরাময় হলে এই বাতও সেরে যায়। এই বাতে হাত ও পায়ের জোড়াগুলিতে ব্যথা হতে পারে এবং জোড়াগুলি ফুলে যায়। শেষ পর্যায়ে আংগুলের গিটগুলিও ফুলে বিকৃত হয়ে যায়।
খাদ্যব্যবস্থাঃ কিছুদিন আগেও এরূপ বাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি যুক্ত খাদ্য দিয়ে চিকিৎসা করা হতো। তবে এখন চিকিতসকরা প্রচুর ভিটামিন ডি খাওয়ানোকে শুধুমাত্র অপ্রয়োজনই মনে করেন না, ক্ষতিকরও মনে করেন। এই বাতের রোগীরা প্রায়ই এনিমিয়ায় ভুগে থাকেন। এ অবস্থায় রোগীকে লোহাযুক্ত খাদ্য দেওয়া দরকার। এনিমিয়ার দরুণ যেসব রোগীরা দেহে রক্ত গ্রহণ করেন, তারা বেশ সুস্থবোধ করে থাকেন। বর্তমানে চিকিৎসকদের অভিমত যে ভিটামিন ও অন্যান্য খাদ্যউপাদানের অভাব থেকেও এই রোগ হতে পারে। সুতরাং আর্থ্রাইটিস রোগীর খাদ্য প্রস্তুতের সময় সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্যব্যবস্থার দিকে সর্বাগ্রে নজর দেওয়া দরকার। এরুপ খাদ্যে কিছুটা প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া ভালো(৯০-১০০গ্রাম) এবং এই প্রোটিনের গুণগত মানও বেশ উচু হওয়া দরকার। সর্বমোট ক্যালরির পরিমাণ এমন হতে হবে যেন রোগী স্থূলকায় হলে ওজন কমে আসে। ওজন বেশী থাকলে অস্থি-সন্ধিগুলোতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়। যেসব রোগীর ওজন খুব কম তাদের পুষ্টির অভাব রয়েছে ভেবে ক্যালরির পরিমাণ বাড়াতে হবে। এইসকল রোগীর খাদ্যে প্রচুর পরিমানে পানি, ভিটামিন, খনিজ লবণের পরিমাণ বাড়ানোর দিকে খুব নজর দিতে হবে।
এই ধরনের রোগীর খাদ্যের ব্যবস্থা তৈরী করতে গেলে আগে তার পূর্বের খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ধারণা করা প্রয়োজন। কারণ এতে করে তার খাদ্যে আগে কোন পুষ্টি উপাদানের অভাব রয়েছে তা বোঝা যাবে। অনেক সময় দেখা যায়, রোগীর খাদ্যে বিশেষ কোন ভিটামিন অথবা খনিজ লবণের অভাব রয়েছে। এর মাঝে ভিটামিন বি,সি এবং ডি, লোহা ও ক্যালসিয়ামের অভাবযুক্ত খাদ্য উল্লেখযোগ্য। এক্ষেত্রে খাদ্যে এসকল উপাদান সঠিক পরিমানে দিলেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবে। সুতরাং আর্থ্রাইটিস রোগীর খাদ্য সুষম ও পুষ্টিকর হওয়া উচিত। এর সাথে ভিটামিন বি সমূহ ও ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে দিলেই ভালো হয়ে যায় রোগী।
আরো পড়ুনঃ
রক্তের উচ্চচাপ ও খাদ্যব্যবস্থা
2 Comments