
সারা পৃথিবীতে ওমিক্রণ আবার খুব দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সাথে মানুষের মাঝে আবার ছড়িয়ে পড়ছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। সকলেই বর্তমানে চিন্তা করছেন এই পরিস্থিতিতে আমাদের কি করা উচিত, কি খাওয়া উচিত। এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে আমাদেরকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
খুব দ্রুত গতিতে ওমিক্রণ ছড়িয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা কিভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি? এই করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে হলে আমাদেরকে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম একজন ব্যক্তিকে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ইমিউন সিস্টেম বিভিন্ন অর্গান, কোষ, প্রোটিন ও টিস্যু দ্বারা তৈরী। এগুলো একসাথে মিলে বাইরের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও যেকোন ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে।
কিছু পুষ্টিকর খাদ্য নিয়ে আমরা কথা বলবো যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে-
কি কি খাবেন?
ফল ও সবজি-
যেসব ফল ও সবজি বিভিন্ন রঙয়ের যেমন- লাল, নীল, কমলা, হলুদ ও পার্পেল হয় সেসব ফল ও সবজিতে ভিটামিন যেমন- বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই থাকে। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিওক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এসব খাদ্য উপাদান আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
ভিটামিন সিযুক্ত ফল ও সবজি-
১। সবুজ ও লাল মরিচ
২। ব্রকলি
৩। পালং শাক
৪। ফুলকপি
৫। বাধাকপি
৬। লেবু
৭। কমলা লেবু
৮। মুসম্বি
৯। আঙ্গুর
১০। স্ট্রবেরি
১১। কিউই ইত্যাদি।
বিটা ক্যারোটিনযুক্ত ফল ও সবজি-
বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন- এ তে পরিণত হয়। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
১। ব্রকলি
২। গাজর
৩। মিষ্টি আলু
৪। পালং শাক
৫। অ্যাপ্রিকট
প্রোটিনযুক্ত খাবার
শ্বেত রক্তকণিকা আকারে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয়। এই কোষগুলো অ্যান্টিবডি তৈরী করে। ফলে শরীরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া ধবংসপ্রাপ্ত হয়। এই অ্যান্টিবডি হলো প্রোটিন। তাই ডায়েটে প্রচুর পরিমেণে প্রোটিন রাখতে হবে, যাতে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি তৈরী হতে পারে।
১। ডিম
২। সয়াবিন
৩। দুধ
৪। দই
৫। বিনস
৬। কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তা বাদাম.
৭। তরমুজ, সূর্যমুখী, খরমুজের বীজ ইত্যাদি।
প্রোবায়োটিকসযুক্ত খাবার-
প্রোবায়োটিক এক ধরনের অপাচ্য খাবার যেগুলো আমাদের পাকস্থলীর স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ায় ও হজমে সহায়তা করে এবং ভালো ভিটামিনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
১। কলা
২। দই
৩। পেঁয়াজ
৪। রসুন
৫। কলাই
৬। চিজ
৭। শস্য দান ইত্যাদি।

জিঙ্কযুক্ত খাবার-
জিংক আমাদের দেহের ইমিউন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি রোগের সংক্রমণ রোধ করতে খুব ভালো কাজ করে।
১। দই
২। সবধরনের বিনস
৩। কাজুবাদাম
৪। আখরোট, পেস্তা বাদাম
৫। চানার ডাল
৬। ছোলা
৭। টোফু ইত্যাদি।
ভিটামিন-ডিযুক্ত খাবার-
ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খুব ভালো সাহায্য করে। এটি আমাদের স্বাসকষ্ট দূর করে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে ভিটামিন ডি খুব ভালো কাজ করে।
১। ডিম
২। ফলের রস
৩। মাশরুম
৪। সয়াবিন মিল্ক থেকে তৈরী টোফু, দই, চিজ
৫। ফোর্টিফায়েড দুধ ইত্যাদি
সেলেনিয়ামযুক্ত খাবার-
সেলেনিয়াম এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
১। ডিম
২। কটেজ চিজ
৩। কলা
৪। কাজুবাদাম
৫। মাশরুম
৬। ওটমিল
৭। পালং শাক
৮। ডাল
৯। ব্রাউন রাইস
১০। সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত হাইড্রেশনযুক্ত খাবার-
শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে হাইড্রেট থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়। তাই লেবু জল, ডাবের পানি, ফলমূল, স্যুপ, তরমুজ, বাটার মিল্ক খাওয়া উচিত।
মশলা
১। হলুদ
২। গোল মরিচ
৩। কেশর
৪। লবঙ্গ
৫। দারুচিনি
৬। লাল মরিচ.
৭। রসুন ইত্যাদি।
যে যে খাবারগুলি খাবেন না
কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেসব খাবার আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই এসব খাবার খাওয়া উচিত নয়।
১। রিফাইন্ড অয়েল
২। চিনিযুক্ত পানীয়।
৩। সোডা
৪। বিভিন্ন ধরনের প্রসেড ফুড যেমন- পপ কর্ণ, ফ্রোজেন ফুড, কুইজ, চিপস, কর্ণ ফ্লেক্স ইত্যাদি।
৫। ফাস্টফুড
৬। রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট যেমন- চিনি, ময়দা, সাদা পাউরুটি, সাদা চাল, পাস্তা।
৭। ক্যাফেন রয়েছে এমন খাবার যেমন- এনার্জি ড্রিংক, সোডা, ব্ল্যাক টি, ডার্ক চকোলেট ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ
3 Comments