
গর্ভবতী হলেই মেয়েদের ডায়েট বা খাদ্য সম্পূর্ণ্রুপে ঘুরে যায়। এইসময়ে নিজের পছন্দের সব খাবার খাওয়া যায় না। আবার কিছু অপছন্দের খাবার ও আপনার ডায়েট চার্টে যোগ হতেই পারে। এসব খাবার মূলত মা ও বাচ্চার উপকারের জন্যই খাওয়া হয়ে থাকে। আবার এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে পরে অনুশোচনা করা লাগতে পারে। গর্ভাবস্থায় কয়েকটি পানীয় এড়িয়ে চলতে হতে পারে। গর্ভাবস্থায় কোন কোন পানীয় সেবন করা যাবে সে বিষয়ে মোটামুটি নারীদের কিছুটা হলেও ধারণা থাকে। কিন্তু কোন কোন পানীয় একদমই গর্ভবতী নারীদের পান করা যাবে না সে বিষয়ে কোন ধারণা থাকে না তাই আজ মা ও সন্তানের ভালোর কিছু পানীয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো।
কিছু কিছু পানীয় আছে যেগুলো পান করলে মায়ের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
গর্ভবতী মায়েদের কোন জিনিসগুলি পান করা যাবে না?
কোন কোন পানীয় গুলো গর্ভাবস্থায় নারীদের পান করা উচিত নয় সে বিষয়ে আজ কিছুটা ধারণা দেওয়া হবে।
১। ডায়েট সোডা-
ডায়েট সোডার গায়ে লেখা থাকে এটি স্বাস্থ্যকর ও ডায়েটের জন্যও ভালো। এই ডায়েট পানীয়টির মধ্যে উপস্থিত থাকে একটি অন্যতম উপাদান হচ্ছে ক্যাফিন। ক্যাফিন ছাড়াও এতে আরো কিছু কৃত্রিম মিষ্টি জাতীয় উপাদান মিশানো হয়ে থাকে। এদের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে স্যাকারিন। স্যাকারিন খুবই শক্তিশালী একটি রাসায়নিক উপাদান যা গর্ভস্থ শিশুর কাছে পৌছে গিয়ে শিশুর ক্ষতি করে থাকে। অতিরিক্ত এটি গ্রহণ করলে এটি শিশুর বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। আবার মা ও শিশুর দেহে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে।
২। কফি-
অনেকেরই গরম ধোয়া ওঠা কফি ছাড়া যেন সকাল শুরুই হয় না। তাদের জন্য এই কথাটি কিছুটা বেদনাদায়ক। মূলত গর্ভাবস্থায় ক্যাফিন থেকে সম্পূর্ণ্রুপে বিরত থাকা একটি আর্দশ অভ্যাস হতে পারে। তবে কারো কারো জন্য এটি খানিকটা কষ্টকর হতে পারে। তাদের জন্য একদিনে দুই কাপ কফি পান করা যেতে পারে। কফি পানের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আনতে হবে। গর্ভাবস্থায় যতটা সম্ভব কফি পান থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে প্রথম ত্রৈমাসিকে কফি পান করলে ক্যাফিন থেকে গর্ভপাত হওয়ার ঝুকি থাকে।
৩। পাস্তুরাইজ না করা দুধ ও জ্যুস
অনেক মানুষের কাছে একটি দিনের সূচনা হয়ে থাকে এক গ্লাস দুধ ও এক গ্লাসের ফলের জ্যুস দিয়ে। এই অভ্যাস গর্ভবতী মায়েদের জন্য আরো বেশি ভালো। তবে দুধ ও ফলের রসগুলো যদি নন-পাস্তুরাইজড হয়ে থাকে তবে সেগুলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর হয়ে থাকে।
পাস্তুরাইজেশন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যা কোন খাদ্য উপাদানে উপস্থিত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুগুলো অপসারিত করে। ক্রয় করা দুধ ও ফলের রস যদি পাস্তুরাইজড না হয়ে থাকে তবে সেটিতে বিদ্যমান ব্যাকটেরিয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে। সেগুলো মায়ের শরীরে প্রবেশ করে খুব সহজেই গর্ভস্থ শিশুর শরীরে প্রবেশ করবে। এভাবে শিশুর শরীরে ক্ষতি করবে।
৪। গ্রিন টি-
গ্রিন টি যে গর্ভবতী মায়েদের জন্য ক্ষতিকর সেটা আমরা কেউ ভাবতেই পারি না। গ্রিন টি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ভালো কি ক্ষতিকর এই নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অনেক পুষ্টিবিদ গর্ভবতী মহিলাদেরকে চায়ের পরিবর্তে গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু গ্রিন টিতেও কিছুটা পরিমাণে ক্যাফিন রয়েছে। ফলে এটি মায়ের শরীরের বিপাককে বৃদ্ধি করে। এটি ফলিক এসিড শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৫। সফট ড্রিংক-
বর্তমানে আধুনিক জীবনযাত্রায় সফট ড্রিংক পান করাকে অনেকেই নিয়মিত ক্রিয়ায় পরিণত করেছে। এটি বিভিন্ন স্বাদযুক্ত হয়ে থাকে। কোলা স্বাদযুক্ত বা ফলের স্বাদযুক্ত যেমনই হয়ে থাকুক না কেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এসব খাবারের বেশ চল উঠেছে। এগুলো আবার সতেজকারী হিসাবেও কাজ করে থাকে। ফলে গর্ভবতী মহিলারা এটিকে বেছে নেয়। এই পানীয়তে ক্যাফিনের পাশাপাশি কুইনাইন ও থাকে। ক্যাফিন ও কুইনাইন একটি গর্ভবতী মহিলার জন্য বেশ বিপদজ্জনক ও হতে পারে।
৬। আইসড টি-
গ্রীষ্মকালে যারা গর্ভবতী হয়ে থাকে তাদের জন্য কিছু সতেজকারী ও শীতল পানীয় পান করতে চায়। আইসড টি এর মাঝে কোন ধরনের কৃত্রিম মিষ্টি যুক্ত থাকে না এবং এটি শীতল পানীয় বলে অনেকেই এটিকে অক্ষতিকর বলে মনে করে। কিন্তু এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফিন থাকায় এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
এছাড়াও গর্ভাবস্থায় যেকোন ধরনের জ্যুস পান করার আগে ভালো মতো জেনে পান করা উচিত। সবাইকে জ্যুসের ব্যাপারে সর্তক হতে হবে। এসময়ে কোন ধরনের অ্যালকোহল পান করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ