
বর্তমানে মানুষের ঘরবাড়ি ছোট থেকে ছোটতর হচ্ছে। ঢাকায় ব্যস্ত সময়ে মানুষ কাজের প্রয়োজনে পাড়ি জমায়। ফলে নগরীতে মানুষের বাস বাড়ছে ও প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ির আকার ছোট হচ্ছে। শহরে ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা বাড়ছে। এসব ছোট ফ্ল্যাটকে মনের মতো করে সাজাতে হবে।
করোনা মহামারীতে মানুষ ঘরেই বেশি সময় কাটাচ্ছে। ঘরের বাইরে যাচ্ছে শুধু কাজের প্রয়োজনে। ছোট ফ্লাটে বাসা কিভাবে গুছাবে ও কিভাবে আসবাবপত্র রাখা যাবে সেই নিয়ে সকলের মাথায় দুশ্চিন্তা। বাসা অনুযায়ী আসবাব পত্র বড় বা বেশি হয়ে গেলে ঝামেলা। তখন ঘর খোলামেলা থাকে না। ঘিঞ্জি হয়ে উঠে। তাই আসবাব এমনভাবে রাখা উচিত যাতে ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস যাওয়া আসা করতে পারে। ঘরে যেন চলাফেরা করার মতো জায়গা থাকে। ছোট ফ্ল্যাট কিভাবে সুন্দর মতো জায়গা খালি রেখে সাজানো যায় তার কিছু ধারণা দেওয়া হলো-
সঠিক আসবাব নির্বাচন
একটি ছোট ঘর সাজাতে প্রথমেই সঠিক আসবাব পত্র নির্বাচন করতে হবে। কোন আসবাবটি সবসময় প্রয়োজন পড়ে ও কোন আসবাবটি মাঝে মাঝে প্রয়োজন পড়ে সেটি প্রথমে ভাবতে হবে। যেমন- খাবার টেবিল, বিছানা ও পড়ার টেবিল। এগুলো শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়েই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া বাকি সময় অব্যবহৃত থেকে যায়। তাই এগুলো ভাজযোগ্য হতে পারে। প্রয়োজনে যাতে ব্যবহার করা যায়। আবার প্রয়োজন শেষে উঠিয়ে রাখা যায়। তাহলে ঘরে অনেক জায়গা থাকবে।
কাস্টমাইজড ফার্নিচার নির্বাচন
ছোট ফ্লাটে ফার্নিচার নির্বাচন করতে হলে ফাকা জায়গা মেপে ফার্নিচার নির্বাচন করতে হয়। ছোট ফ্লাটের জন্য কাস্টমাইজড ফার্নিচার নির্বাচন করা ভালো। এতে সঠিক মাপ অনুযায়ী ফার্নিচার পাওয়া যায় ও ঘরেও যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যায়। সোফা, বিছানা, ওয়ার্ডবোর রুমের একটি নির্দিষ্ট জায়গার সাথে সেট করে নেওয়া যায়। তাহলে কোন জায়গা ফেলে রাখা হয় না।
আবার মাল্টি ফাংশনাল আসবাব কাস্টমাইজড করে বানিয়ে নিলে ভালো হয়। ছোট রুমের সাথে মানিয়ে খাটের সাথে বুক শেলফ যোগ করা যেতে পারে। বুক শেলফে বই রাখা যাবে ও খাটের নিচে জামা কাপড় রাখার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলে অনেক জায়গা বেঁচে যায়।
প্রবেশমুখের আসবাব
বাড়িতে ঢোকার মুখ সবসময়ই খুব সংকীর্ণ হয়ে থাকে। সেখানে সবাই সাধারণত জুতার বাক্স রেখে থাকে। ফলে জায়গাটি বেশি চিকন লাগে দেখতে। দরজার সামনে জুতার ক্যাবিনেট রাখলে সহজে তা চোখে পড়ে না। ফলে জায়গা বেঁচে যায়। প্রবেশ পথে একটি স্টোরেজসহ অটোমান যোগ করা যেতে পারে। এতে রেইনকোট, টুপি, কম্বল রাখা যেতে পারে। আবার সেখানে বসে জুতার ফিতাও বাধা যায়। দরজার উপরে একটি শেলফ লাগানো যেতে পারে যেখানে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা যেতে পারে। দরজার উপরে লাগালে কারো চোখেও পড়বে না সহজে।
লিভিংরুমের আসবাব
লিভিং রুমে জায়গা বাচাতে মাল্টিফাংশনাল আসবাব নির্বাচন করা উচিত। এসব আসবাব একই সাথে কয়েক ধরনের কাজ করতে সাহায্য করবে। যেমন কফি খাওয়া ও কাজ করার জন্য একটি টেবিল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ছোট লিভিং রুমের জন্য একদম পারফেক্ট। সোফার নিচে একটি আলাদা স্টোরেজের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে অনেক দরকারি জিনিস রাখা যেতে পারে। তাহলে ঘর এলোমেলো লাগবে না। জায়গা ও বাচবে অনেক। আবার সোফা সহ বিছানা ও করা যেতে পারে। দিনে বসার কাজে লাগানো যেতে পারে আবার রাতে শোয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সোফা কাম বেড মেহমান এলে ঝামেলা কমিয়ে দেয়। এভাবে বসার ঘর রাতে শোবার ঘরে রূপান্তরিত হতে পারে। জিনিসপত্র, বই, রিমোট ও খেলনা রাখার জন্য টিভি কেবিনেট এর উপর তাক করা যেতে পারে।
রান্নাঘরের আসবাব
রান্নাঘরের ফ্রিজ ও কাউন্টার টপের মাঝের জায়গা কাজে লাগানো যেতে পারে। একটি চাকা যুক্ত কার্ট লাগিয়ে মশলার জন্য কিছুটা অতিরিক্ত জায়গা করা যেতে পারে। খোলা তাক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে রান্না খোলামেলা লাগবে।
লম্বা স্থানের জন্য একটি লম্বা তাক বানিয়ে নিতে পারেন। বন্ধ তাকগুলোতে হ্যান্ডেল বিহীন ফিটিংস ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে রান্না ঘর খোলামেলা হবে।
ডাইনিং আসবাব
ফোল্ডিং ডাইনিং টেবিলের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। খাওয়া দাওয়া করার পর টেবিলটি তুলে রাখা যেতে পারে। ডাইনিং স্পেসে ছোট জায়গা থাকলে বা রিডিংরুমের জন্য কোন জায়গা না থাকলে ড্রয়িং রুমের সোফা কাজে লাগানো যেতে পারে। সোফার পিছনে একটি টেবিল যোগ করা যেতে পারে। তার সাথে চেয়ার সেট করে নিতে হবে। সোফার পিছনে বই রাখার র্যাক করে নেওয়া যেতে পারে। তাহলে জায়গা কম লাগবে ও বসার জায়গা তৈরী হবে।
আরো পড়ুনঃ
One Comment