নন-স্টিকের পাত্রে রান্না করা খাবার খেলে কি হয় দেখুন?
নন-স্টিকের পাত্রের ক্ষতিকর দিক

বাঙালি সবসময় তেল মশলাযুক্ত খাবার ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। এসব খাবার ছাড়া তাদের যেন চলেই না। ভাজাভুজি ভাজতে ও ফাস্টফুড বানাতে গেলে নন-স্টিকের ফ্রাইপ্যানের খুব দরকার পড়ে।
বাঙালি সবসময় টাটকা খাবার খায়। কোলেস্টেরলের কোন ভয় নেই তাদের। তারা সবসময় এটা ওটা রান্না করেই যাচ্ছে। তাই রান্নাঘরে ঝোলানো নন-স্টিকের পাত্রের উপর ভালোই ঝক্কি যাচ্ছে।
আমাদের শরীর সুস্থ থাকা বা না থাকার উপর কোন ধরনের হাড়ি, কড়াইতে রান্না করছি সেটা দেখাও জরুরি। মূলত বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে পাল্লা দিতে দিতে নতুন নতুন গবেষণা উদ্ভাবন হচ্ছে। সেই সাথে অ্যালুমিনিয়ামের হাড়ি, কড়াই ও ননস্টিকের ফ্রাইং প্যান আমাদের শরীরে নানা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করলে পোড়া দাগ সহজেই উঠানো যায় ও নন-স্টিকের পাত্রে রান্না করলে কম তেলেই হয়ে যায় তাই বর্তমানে সবাই চায় অ্যালুমিনিয়াম ও নন-স্টিকের পাত্রে রান্না করতে।
কিন্তু এই নন-স্টিকের পাত্র যে স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা আমরা ভাবতেও পারি না। গবেষকদের মতে, নন-স্টিকের পাত্র পারফ্লুওরোয়াল্কাইল কম্পাইন্ড ( পিএফসি ) দ্বারা তৈরী করা হয়। এই যৌগটি ভয়ের অন্যতম কারণ। এই যৌগটি ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। শুধুমাত্র ক্যান্সারই নয় এছাড়া ও থাইওরয়েড, বন্ধ্যাত্বের ও কারণ।
যারা নন-স্টিকের কোটিং করে থাকেন তাদের মতে গত দশ বছর ধরে এই যৌগটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। ইতালির একটি হাই-স্কুলে ৩৮৩ জন বাচ্চার উপর একটি পরীক্ষা চালানো হয়। এদের মধ্যে ২১২ জনের রক্তে পিএফসি পুরুষ হরমোনকে মারাত্নক ক্ষতি করছে। এর ফলে যৌনাঙ্গের আকৃতি বদলে যাচ্ছে। আবার প্রজনন ক্ষমতা ও বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে। ফাস্ট ফুড ও নন-স্টিকের প্যান থেকে এই ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।

নন-স্টিকের পাত্র টেফলন দ্বারা তৈরী করা হয়ে থাকে। এই টেফলন” পলিটেট্রা ফ্লোরো ইথিলিন” এর কোটিং। কোটিং এর খরচ কমাতে টেফলনের সাথে মেশানো হয় ” পারফ্লোরোওক্টানয়েট অ্যাসিড” ফলে উচ্চ তাপমাত্রায় যখন নন-স্টিকের পাত্রে রান্না করা হয় বা পাত্রটি গরম হয়ে গেলে যখন খুব ধোয়া উঠে তখনকার এই ধোয়া খুব ক্ষতিকর স্বাস্থ্যের পক্ষে। এই ধোয়া রক্তের সাথে মিশে যায়। এটি কার্সিজোনিক।
নন-স্টিকের পাত্রে বেশি তেল দিয়ে কিছু ভাজলে তখন তাপমাত্রা অনেক বেশি উঠে যায়। ২০০-২৫০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ঘি দিয়ে কিছু ভাজলে ৪০০ ডিগ্রী তাপমাত্রা উঠে যায়। তখন কোটিং গলে বিষাক্ত তাপমাত্রা সৃষ্টি হয়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
আবার যাদের অনেক বেশি চুল পড়ে যাচ্ছে তাদের ও ৮০% এই “পিএফওএ” পজিটিভ। যার ৬৫% হাই কোলেস্টেরলে সমসায় ভোগেন বা মহিলারা ৭০% ওভারিয়ান ডিজিজে ভোগে এই টেফলনের কারণে।
এই রকম বাসন যেহেতু আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক তাই এসব বাসন ব্যবহার না করে পূর্বের মতোই স্টেনলেস স্টিলের বাসনে রান্না করতে পারেন। আবার সেরামিক বা কাস্ট আয়রনের পত্রেও রান্না করতে পারেন।
তাই সুস্থ থাকতে হলে লোহা, কাস্ট আয়রন, সেরামিকের বাসনে অল্প তেলে খাবার রান্না করতে হবে। নন-স্টিকের বাসন আর ব্যবহার করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ
ফ্রিজে খাবার রাখার সময় যেসব বিষয় মানতে হবে
হলদে দুধ কিভাবে বানাবেন এবং খাওয়ার উপকারিতা
চকলেট খাচ্ছেন? না কি খাচ্ছেন না? জানুন চকলেটের উপকারিতা ও অপকারিতা
One Comment