
বাংলাদেশের পিঠাপুলি সমস্ত বিশ্বের মাঝে বিখ্যাত। বাংলাদেশের কিছু ঐতিহ্যবাহী পিঠার কথা আজ আমরা জানাবো। এসব পিঠা আমাদের দেশের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
নোয়াখালির পান্তুয়া পিঠা-

পান্তুয়া পিঠা নোয়াখালির একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা। এই পিঠা বানানো খুবই সহজ। এই পিঠা তৈরীর প্রণালী অনেকটা পাটি সাপটা পিঠা তৈরীর মতোই। এই পিঠা দুধ, ডিম, ময়দা ও চিনি দিয়ে খুবই সহজে তৈরী করা যায়। এই পিঠা শুধু যে শীতকালেই তৈরী করা যায় তা নয় এই পিঠা যেকোন মৌসুমেই বিকালের নাস্তায় তৈরী করা যায়। পান্তুয়া পিঠা একটি মিষ্টিজাতীয় পিঠা। চিনি আছে বলে এই পিঠা মিষ্টি হয়ে থাকে। যদি কারো মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে চিনির পরিবর্তে লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। লবণ দিয়ে বানালে আরো স্বাস্থ্য সম্মত হবে। বর্তমানে ইউটিউবে রান্নার রেসিপিতে এই পিঠার রেসিপি অনেক পাওয়া যায়।
ছিটকা রুটি পিঠা-

ছিটকা রুটি পিঠা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা। এই পিঠা সকালের নাস্তায় বা বিকালের খাবারের সময়েও খাওয়া যায়। এই পিঠা বানানো খুবই সহজ ও যেকোন সময়েই এই পিঠা বানানো যায়।
চালের গুড়া, পানি, ময়দা, লবণ ও তেল দিয়ে এই পিঠা তৈরী করা হয়। প্রথমে একটি বাটিতে চালের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে ময়দা যোগ করে ব্যাটার তৈরী করা হয়। তারপর কড়াইতে তেল সামান্য গরম করে মাঝারি তাপে তেল গরম করার পর হাতের সাহায্যে ব্যাটার কড়াইতে পাতলা করে গোলাকার ভাবে ছড়িয়ে দিতে হবে। পরে কিছু সময় অপেক্ষা করে কড়াই নামিয়ে নিতে হয়। তাহলেই প্রস্তুত হয়ে যায় ছিটকা রুটি। ছিটকা রুটি পিঠা দুধ বা মাংসের সাথে খেতে বেশ মজা।
নরসিংদীর নকশী পিঠা-

নরসিংদীর একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা হচ্ছে নকশী পিঠা। গুড়ের রসে ভেজানো হয় এই পিঠা। চালের গুড়া দিয়েই এই পিঠা তৈরী করা যায়। উপকরণ শুধুমাত্র একটি লাগলেও এই পিঠা বানানো খুবই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রতিটি পিঠা তৈরী করতে সুন্দর সুন্দর নকশা তৈরি করে ফুটিয়ে তোলা হয়। উঠানো ধরনের নকশা করলে খুব বেশি মুচমুচে হয়।
নোয়াখালির খোলাজা পিঠা-

ফেনী ও নোয়াখালি অঞ্চলে খোলাজা পিঠা খুব বেশি পরিচিত। শীতকালে এই পিঠা বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। মাটির খোলায় এই পিঠা বানানো হয় বলে এই পিঠার নাম দেওয়া হয়েছে খোলাজা পিঠা। এই পিঠা অনেক বেশি সুস্বাদু হয়ে থাকে। ঢেকি ছাটা চালের গুড়া, পানি, লবণ ও ডিম এই পিঠার মূল উপকরণ।
প্রথমে চালের গুড়া, পানি ও লবণ মিশিয়ে পাতলা মিশ্রণ তৈরী করে নিতে হবে। মিশ্রণটি তরল করে তৈরী করে নিতে হবে। এই মিশ্রণে ডিম ফেটিয়ে নিতে হবে। এবার মাটির খোলাটি গরম করে নিতে হবে। খোলার উপরিভাগে হালকা তেল মাখিয়ে মিশ্রণটি খোলায় ঢেলে চারিদিকে পুরু করে ছড়িয়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। কিছু সময় পর হালকা শক্ত হয়ে গেলে পিঠাটি উঠিয়ে নিতে হবে। এই পিঠা অনেকটা রুটির মতোই। এর উপরে অসংখ্য ছিদ্র থাকে।
ঝাল পিঠা-

বাংলাদেশের অধিকাংশ পিঠাই মিষ্টি স্বাদের হয়ে থাকে। সেদিক থেকে তুলনা করলে এই পিঠাটি অন্য রকম। নামে যেমন ঝাল পিঠা তেমনি খেতেও এই পিঠা ঝাল। ঝাল পিঠা খেতে খুবই সুস্বাদু ও মজাদার।
ঝাল পিঠা ময়দা, বেকিং পাউডার, কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, হলুদের গুড়া, এলাচ, টমেটো কুচি, আদা, রসুন, ডিম, পেঁয়াজ কুচি, লবণ ও তেল দিয়ে তৈরী করা হয়। এই সকল উপাদান একসাথে মিশিয়ে ভাজা হয় এই পিঠা।
আরো পড়ুনঃ