
আমাদের জীবন যাপনের মূখ্য উপাদান হচ্ছে খাদ্য। এসব খাদ্য থেকে আমরা ভিটামিন, মিনারেল পেয়ে থাকি। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের মাঝে আমরা আজ কথা বলবো ভিটামিন ডি নিয়ে। ভিটামিন ডি আমরা পেয়ে থাকি সূর্যালোক থেকে। হাড় ও দাঁতের গঠনে এসব ভিটামিন কাজে লাগে।
ভিটামিন ডি আমাদের জন্য এতটা কেন প্রয়োজন
ভিটামিন ডি আমাদের জীবনের এক অপরিহার্য উৎস। এর জৈবনিক গুরুত্ব রয়েছে ও মেডিক্যাল কাজেও এর ব্যবহার অনস্বীকার্য।
ভিটামিন ডি শিশুদের রিকেটস, বড়দের অস্টিওম্যালেশিয়া ও হাড় ক্ষয় জনিত বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
থাইরয়েডএর কাজে বিঘ্ন ও অসময়ে দাঁত পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
ভিটামিন ডি আমাদের দেহের অন্ত্রের ক্যালসিয়ামের শোষণ ও ফসফরাসের মাত্রা ঠিক রাখে।
শিশুর জন্মের পর থেকে তার হাড় গঠনে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুর হাড় নরম থেকে যায়।
ভিটামিন ডি এর অভাবে বাচ্চাদের পায়ের হাড় বেকে যায়। বৃদ্ধদের গিটে ব্যথা ও বাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুনঃ জন্ডিসে আক্রান্ত হলে খাদ্যব্যবস্থা জেনে নিতে পারেন
ভিটামিন ডি ঘাটতি হওয়ার লক্ষণঃ
আমাদের সবার মনেই একটা প্রশ্ন আসে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দিলে আমরা কিভাবে বুঝবো। আজ সেইটা নিয়েই কথা বলা হবে।
- খুব বেশি অসুস্থ হওয়া এবং একবার অসুস্থ হলে রোগ সারতে অনেক দেরি হওয়া ভিটামিন ডি এর অভাবঅজনিত প্রধান লক্ষণ। এছাড়া অনেকেই আছেন যারা বাড়িতে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা করতে থাকেন তাদের পরিণামে আরো ভুগতে হয়।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কোথায় কাটা, ঘা হলে সারতে দেরি লাগে।
- কাজের ফলে ক্লান্তিভাব আসে। কিন্তু ভিটামিন ডি এর অভাবে অকারণেই ক্লান্তিভাব, ঝিমুনি, ঘুম আসে।
- চুল পড়ে খুব বেশি ভিটামিন ডি এর অভাবে।
- শরীরে ম্যাজমেজে ভাব, হাত পায়ের জয়েন্টে ব্যথা, কোথাও চোট না লাগলেও গিটে আট ধরে আসা ভিটামিন ডি এর অভাবে।
- ওজন বৃদ্ধি পায় অনেকেরই হুট করে। ভিটামিন ডি এর প্রভাবে ওজন কমতেও পারে। আরো পড়ুনঃ করোনাকালীন সময়ে বাইরে যাওয়ার সময় যা যা মাথায় রাখতে হবে
ভিটামিন ডি এর উপকারিতা:
- ভিটামিন ডি এর কিছু উপকারিতা রয়েছে যা সবার জন্য জেনে রাখা দরকার।
- ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে চোখের যেকন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের অনেকেরই চোখের সমস্যা হতে দেখা যায় সেগুলো ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে দূর হয়ে যায়।
- ভিটামিন ডি এর একটি উপদান ক্যালসিয়াম যা পেশির শক্তি বাড়ায় এবং পেশির টান দূর করে।
- ভিটামিন ডি কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- ওজন হ্রাস করে ভিটামিন ডি। ক্রনিক মাইগ্রেন কমায়। ক্যান্সারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।
- গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকলেও বর্ষাকালে বা শীতকালে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দেয়। তাই ওইসময় মন খারাপ দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত।
- ভিটামিন ডি রক্তে জৈবনিক কাজ করে রোগ ব্যধি থেকে মুক্তি দেয়। আমাদের ইম্যুউনিটি বুস্ট করে। আরো পড়ুনঃ রোজায় ডায়াবেটিস রোগীদের কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে
শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি:
- শরীরে কি পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকবে তা বয়সের উপর নির্ভর করে।
- তবে পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি ও ১০০০ মাইক্রো গ্রাম ক্যালসিয়াম এর চাহিদা থেকে থাকে।
- অন্যদিকে ৭০+ বয়সীদের জন্য সেই পরিমান বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০ মাইক্রোগ্রাম।
- বয়স অনুপাতে ভিটামিন ডি এর ডিমান্ড ২৫-১০০ এমজি এর মধ্যে ঘোরা ফেরা করে থাকে। আরো পড়ুনঃ
- করোনা হওয়ার পর শরীর দূর্বল হলে কি করবেন
ভিটামিন ডি কাউন্ট বাড়ানোর উপায়:
- হাড়ের গঠনে ভিটামিন ডি কাজ করে। বাচ্চাদের ৮০% হাড়ের গঠন হয় ভিটামিন ডি থেকে। তাই বাচ্চাদের রোদে বসাতে হবে বা খেলাধুলা করতে দিতে হবে রোদে।
- বড়দের ১০-১৫ মিনিট রোদে বসতে হয়। এতে আমাদের দেহে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। কিন্তু রোদে যাওয়ার সময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে না।
- শীতকালে বেশ অনেক সময় রোদে দাঁড়ানো যেতে পারে।
- খাদ্যতালিকায় গরুর দুধ, কডলিভার ওয়েল রাখতে হবে।
- পালং শাক, বিনস খাওয়া যেতে পারে। এতে খুব ভালো পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। টক দই, কমলালেবু ভিটামিন ডি এর সমৃদ্ধ উৎস।
- ত্বকের লাবণ্যতা বাড়াতে ভিটামিন ডি ব্যবহার করা যেতে পারে। আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিসের কারণ, লক্ষণ ও পরীক্ষা
One Comment