
রমজান মাসে সবাই অনেক বেশি ইবাদত করে থাকে। কিন্তু শরীর যদি অসুস্থ থাকে তাহলে আপনি ঠিকমতো ইবাদত করতে পারবেন না। তাই ইবাদত করতে হলে শরীরকে সুস্থ রাখতে হবে।
রমজান মাসে জীবনযাপনের প্রতি একটু বেশি সচেতন হতে হয়। যদি একটু অসচেতন হওয়া যায় তাহলে শরীর খারাপ হয়ে যেতে পারে। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার খেতে হবে।
রোজার সময়ে আমরা ইফতার ও সেহেরীতে বেশি খাবার খেয়ে থাকি। সেহেরী দিয়ে একটা দিনের শুরু হয়। সেহেরীতে যদি ভালোমতো খাবার না খাওয়া হয় তাহলে শরীরের উপর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পড়ে।
তাই সেহেরীর খাবারের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। এখন দেখবো সেহেরীতে কি খাবো আর কি খাবো না?
রোজায় কেমন হওয়া উচিত খাদ্যাভ্যাস
সেহেরীতে কি খাবেন
১। শরীরকে কর্মক্ষম ও সুস্থ রাখতে হলে প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। রোজার এই সময়ে শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। প্রোটিন সমৃদ্ধ কিছু খাবার হচ্ছে ডিম, দুধ, দই, পনির, মুরগির মাংস, বাদাম, ডাল জাতীয় খাবার ইত্যাদি।
২। সেহেরীতে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল ও সবজি রাখতে পারেন।পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে দীর্ঘসময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। শরীর সবল ও সতেজ থাকে। সহজে ক্লান্তি আসে না। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য হচ্ছে পালং শাক, কলা , ব্রকলি, মটোর, খরমুজ, মাশরুম ইত্যাদি।
৩। রোজার সময়ে দীর্ঘসময় আমাদের পেট খালি থাকে। এসময় যদি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া যায় তাহলে পরিপাকতন্ত্রে বিপাক দেখা দিতে পারে। তাই সেহেরীতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখা ভালো। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখার পাশাপাশি আমাদের শরীর শীতল রাখে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য হচ্ছে আপেল , ব্রোকলি, শাকসবজি, ওটস, বিনস ইত্যাদি।
**ইফতারের পাশাপাশি সেহেরীতেও ছোলা রাখতে পারেন। গরমে শরীর ঠান্ডা করা সবজি
সেহেরীতে কি খাবেন না
১। সেহেরী এবং ইফতার কোন সময়েই অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়। উচ্চ লবণযুক্ত খাদ্য খেলে পিপাসা বেশি পায়। রোজা অবস্থায় বেশি পিপাসা পেলে কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। কাজের প্রতি অনীহা তৈরী হয়। লবণ শরীরে পানি জমিয়ে ফেলে ও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই রোজার সময়ে সুস্থ থাকতে চাইলে ইফতার ও সেহেরীতে কম লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
২। সেহেরীতে চা, কফি ও কোমল পানীয় পান করা উচিত নয়। সেহেরীতে এগুলো পান করলে অ্যাসিডিটির ঝুকি বেড়ে যায়। পর্যাপ্ত সাধারণ পানীয় রোজার সময়ে বেশি পান করা উচিত। সুস্বাদু কোন পানীয় রোজায় পান করা উচিত নয়। চা, কফিতে ক্যাফেইন থাকে, এগুলো আমাদের শরীরকে ডিহাইড্রেট করে ফেলে। আমাদের পিপাসা বাড়িয়ে দেয় ও ঘুম কেড়ে নেয়। তাই সেহেরীতে চা, কফি, পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত। বেশি কিসমিস খেলে কি ক্ষতি হতে পারে?
৩। সেহেরীতে মসলাদার ও ভাজাপোড়া কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়। তাহলে শরীরে এসিডিটি দেখা দিতে পারে। আবার যারা এসিডিটিতে ভুগছে তারা তো আরো ভাজাপোড়া খাবার খেতে পারবে না। তাই সেহেরীতে সিঙ্গারা, চপ, পিজ্জা, রোল ও অন্যান্য ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া সেহেরীতে মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার খাওয়া উচিত নয়।
আরো পড়ুনঃ ইফতারে পেট ঠান্ডা করা খাবার