
শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগই হোস্টেল বা হলে থেকে পড়াশোনা করে থাকে। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। তখন হল ও হোস্টেলগুলো ও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ এই বিরতির পর নতুন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি হল ও হোস্টেল ও খুলছে।
দীর্ঘ এই বিরতির পর হোস্টেলে মানিয়ে উঠা বিশাল এক চ্যালেঞ্জের বিষয়। এই চ্যালেঞ্জে কেউ উতরে উঠেছে আবার কেউ কেউ একটু ঝামেলার সম্মুখীন হচ্ছে। হোস্টেল জীবন যদি হয় গোছালো ও পরিপাটি তাহলে এই জীবনের সাথে মানিয়ে নেওয়া খুব বেশি কষ্টকর হবে না। নিজের ঘরের মতো করে হোস্টেল ও গুছিয়ে রাখতে হবে। হোস্টেল কিভাবে গুছিয়ে টিপটপ রাখা যায় সে বিষয়ে ধারণা দেওয়া হলো-
যেহেতু করোনার প্রকোপ এখনো খুব একটা কমেনি তাই বাইরে থেকে হোস্টেলে ফিরেই সবকিছু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত করতে হবে। হলে বা হোস্টেলে নিজেদের যে জায়গাটুকু থাকে তার অধিকাংশ জায়গা জুড়েই থাকে বিছানা। বিছানাতেই আমরা আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময় কাটাই। বিছানায় শুয়ে বসে ও বই পড়ে আমাদের সময় কাটে।
ফলে বিছানার চাদর নির্বাচনে সর্তক হতে হবে। পছন্দের যেকোন রঙয়ের চাদর বিছানায় বিছানো যেতে পারে। তবে গাঢ় রঙয়ের চাদর হলে চাদরে ময়লা ধরলেও সহজে চোখে পড়বে না। তবে ১৫-২০ দিনের মধ্যে চাদর ধুয়ে ফেলা উচিত। গাঢ় রঙয়ের চাদর মন ভালো রাখে। একটি চাদর সংগ্রহে না রেখে আরো কয়েকটা পরিষ্কার চাদর সংগ্রহে রাখতে হবে।
বিছানার চাদরের পাশাপাশি একটি গাঢ় রংয়ের পর্দা ও বাছাই করা উচিত। পর্দা খুব বেশি পাতলা ও যেন না হয় আবার খুব বেশি মোটাও যেন না হয়। পর্দাতে দিনের বেলায় যেন রোদ আটকে এমন মোটা হতে হবে। আবার পর্দা ধুয়ে দিলে যেন শুকিয়ে যায় তাড়াতাড়ি এমন ও হতে হবে।
হোস্টেলের বিছানার পরেই একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হচ্ছে পড়ার টেবিল। পড়ার টেবিল ক্লথ যেন হালকা রঙয়ের হয়। যাতে মনে প্রশান্তি জোগায়। তাহলে পড়াশোনায় ভালো মন বসে। গাঢ় রং হলে পড়ায় মনোযোগ বসে না। টেবিলে বেশি বই না রেখে বুক সেলফে বই রাখা উচিত। রুমের একপাশে সেলফ রেখে বই সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা যায়। রুমে জায়গা কমে থাকলে ওয়াল বুক সেলফ বানানো যেতে পারে। তাহলে জায়গা বাড়বে আবার জায়গাটা ঘিঞ্জিও লাগবে না।
প্রতিদিন বিভিন্ন কারণে বাইরে যেতে হয়। বাইরে থেকে হোস্টেলে ফিরেই নিজের পরিধানকৃত পোশাকটি ধুয়ে ফেলতে হবে। ধুয়ে ফেলা সম্ভব না হলে রোদে শুকিয়ে রাখতে হবে। হোস্টেলে ময়লা কাপর চোপড় কখনো জমিয়ে রাখা যাবে না। তাহলে একবারে অনেকগুলো কাপড়ের চাপ পড়ে যায়। তাই বাইরে থেকে এসেই জামা কাপড় ধুয়ে নিতে হবে। ময়লা কাপড় জমিয়ে রাখলে কাপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
কাপড় রাখার জন্য একটি সিঙ্গেল আলমারি ব্যবহার করা যেতে পারে। কাপড়ের ভাজে ভাজে ন্যাপথলিন রেখে দিলে কাপড় ভালো থাকে। নিজের মোবাইল, ল্যাপটপ, ইয়ারফোন যত্নে রাখতে হবে। নিজের মোবাইল, ল্যাপটপ চার্জ দেওয়া শেষ হলে চার্জার গুছিয়ে ড্রয়ারে বা কোন শপিং ব্যাগে রেখে দিতে হবে।
হোস্টেলে যারা বসবাস করে তাদের খাটের নিচে সংসার। এই সংসার বেশি বড় করা যাবে না। অতিরিক্ত জিনিস হোস্টেল বা হলে আনা যাবে না। যেগুলো একান্তই প্রয়োজন সেগুলো কিনতে হবে। তাহলে পরবর্তীতেও সুবিধা হবে। পড়ার টেবিলে বা বারান্দায় কিছু পছন্দের গাছ লাগানো যেতে পারে।
হোস্টেলে নিজের ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- পেন্সিল, শার্পনার, নেইল কাটার, ইরেজার,স্কেল এগুলো একটি বাক্সে করে টেবিলের কোণায় রেখে দিতে হবে। তাহলে হাতের কাছেই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো পাওয়া যাবে। হোস্টেলের দেয়ালের রং একঘেয়েমি লাগলে নিজেই রংতুলি দিয়ে সামান্য পেইন্ট করে নিতে পারেন। এভাবেই হোস্টেলজীবনে গোছানো ও পরিপাটি থেকে জীবনকে ছন্দময় ও গতিশীল করা যায়।
আরো পড়ুনঃ